1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদ কেন ঢাকায়! - আলোকিত খাগড়াছড়ি

আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদ কেন ঢাকায়!

  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

তৈমুর মল্লিক, উপ-সম্পাদক ■ বাংলাদেশ প্রেস

আত্মস্বীকৃত খুনি আবদুল মাজেদ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় পলাতক ছয় খুনির মধ্যে একজন।

পলাতক বাকি পাঁচ খুনি হলেন আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।

প্রশ্ন হলো, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের এই খুনি কেন এখন ঢাকায়? ৪৫ বছর পেরিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় জুনিয়র এই সেনা অফিসার খুনি চক্রের কমান্ড সারিতে নিজের স্থান পাকা করে নেয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মেজর (অব.) শাহরিয়ার রশিদ খানের আত্মীয় হওয়ায় বঙ্গভবনে খুনি চক্রের সাথে নিজের অবস্থান পাকা করে।

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন সাক্ষী মারফত জানা যায়, ভয়ংকর এই খুনি বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্যাপ্টেন মাজেদ মিন্টো রোডে আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়ির অপারেশন সমন্বয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলো।

এর সব কিছুই ইতিহাসের পাতায়, বিচারিক দলীলে লিপিবদ্ধ  আছে, তাই ইতিহাসের দিকে না গিয়ে মূল বক্তব্যে ফিরে আসি। “কেন এই খুনি এখন ঢাকায়”!

তাদেরতো বঙ্গভবন থেকে সম্মানের সাথে বিশেষ বিমানে থাইল্যান্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেই সাথে ইনডেমনিটি পাশ করা হয়, তাদের কোন বিচার হবে না।  বাহ, বেঈমানের দল – এরপরেও ৪৫ বছর পরে আবার তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হলো? গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায় তিনি শেষ বয়সে ভারতে এসে আত্মগোপন করে। কিন্তু যে সময়ে সমগ্র দুনিয়া করোনা মৃত্যু নিয়ে আন্য দিকে নজর দেবার ফুসুরত পাচ্ছে না, বাংলাদেশ মহামারী রোধ করতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের অন্য সকল কার্যক্রম এক কথায় বন্ধ। দেশের প্রশাসন, গোয়েন্দা, প্রতিরক্ষা সকলেই মানুষের মৃত্যু রোধে করোনার বিরুদ্ধে সোচ্চার, অন্যদিকে ফোকাস দেবার সময় পর্যন্ত নেই – ঠিক সেই সময়ে সেই আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদ কেন ঢাকার মিরপুরে?

কি ভাবে এলো, কোন পথে এলো, কে তাকে পাঠালো, কবে এসেছে সে, কে তাকে দেশের মধ্যে বসবাসের স্থান দিয়েছে, কাদের সাথে তার যোগাযোগ চলেছে, তার সাথে আরো কতজন দেশে প্রবেশ করেছে, কোন টার্গেট নিয়ে তাদের গোপন অবস্থান ইত্যাদি এই সকল প্রশ্ন সামনে চলেই আসে।

এই সকল উত্তর জানা অত্যন্ত জরুরি।  সেই সাথে জানা জরুরি ভারত বা তাদের গোয়েন্দা সংস্থা কি কিছুই জানেনা? যদি না জানে তাহলে বলতে হয় ভারত কার্যত ভঙ্গুর একটি রাষ্ট্র। যদি জানে তাহলে বলতে হয় – শেখ হাসিনা কি ভারতের জন্য চোখের বালি?

এটা না হয় ভিন্ন একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি। সেটার রাস্তা স্বার্থ অনুযায়ী চলবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই খুনিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করাতে বা প্রবেশ করতে বর্তমান মহামারী সময়কে বেছে নেয়া হল কেন?

সাম্প্রতিক সময়ে করোনা নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসা না আসা নিয়ে অনেক কথাই আমরা বলেছি, অনেক কিছুই লিখেছি।  তবে যা কিছু বলেছি লিখেছি সবই ছিলো করোনা ছড়িয়ে পড়া কেন্দ্রিক। স্বপ্নেও কেউ ভাবিনি এর সাথে বা এর মধ্যে লুকিয়ে আছে কি অন্য কোন রহস্য?  এই দুর্যোগের মধ্যেই কি টার্গেট করা হয়েছিলো কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে?  বা অন্য কিছু।

করোনা নিয়ে উদ্ভুত বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে যে পরিস্কার সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে, গার্মেন্টস শ্রমিক, গার্মেন্টস মালিক পক্ষ, দায়িত্বশীল সরকারি দপ্তর, স্বাস্থ্য খাত ইত্যাদির মধ্যে যে সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে সেটাকি আসলেই সমন্বয়হীনতা ছিলো? সব কিছুর মধ্যে একটি গোলকধাঁধা মনে হচ্ছে না?

১। খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদ এখন কেন ঢাকায়?

২। তিনি কবে এসেছে?

৩। কতজন এসেছে?

৪। কোন পথে এসেছে?

৫। আসার আগে বাংলাদেশে কাদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে?

৬। ঢাকায় কোথায় অবস্থান নিয়েছিলো?

৭। কে বা কারা তাকে স্থান দিয়েছে?

৮। বাংলাদেশে কে কে তার সাথে যোগাযোগ করেছে?

৯। করোনা নিয়ে গার্মেন্টস সেক্টর কেন শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে দিলো?

১০। বাংলাদেশের গোয়েন্দা দৃষ্টি অন্যত্র সরাতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আপ ও ডাউন এই ২ ভাগে ভাগ কারা করলো?

১১। প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসে থেকে কেউ কি খন্দকার মোস্তাকের দায়িত্ব পালন করেছে কি?

১২। খালেদা জিয়ার সাথে আগত খুনির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন যোগসাজশ হয়েছে কি?

১৩। করোনা নিয়ে সমন্বয়হীনতা কি পরিকল্পিত?

১৪। সমন্বয়হীনতার মধ্যে দিয়ে এবং করোনা প্রভাব বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে কোন ফাঁক তৈরি করা হয়েছিলো কি?

১৫। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান ও নীরাপত্তার মধ্যে কোন লিকেজ ছিলো কি?

১৬। খুনির আগমন ও করোনা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষ করে মার্কিন মিডিয়া যে ভয় বাঙালিদের মাথায় তুলে দিয়েছে, এই দুইয়ের মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কি?

১৭। মার্কিন নাগরিক ও অন্যান্য দেশের নাগরিক অতিদ্রুত বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেয়া ও খুনির আগমনের মধ্যে কোন সম্পর্ক আছে কি?

১৮। মার্কিন সহ অন্যান্য দেশের করোনা ভয়াবহতা বাংলাদেশ থেকে বেশি হওয়া সত্ত্বেও তাদের নাগরিক সরিয়ে নেয়া ও খুনির আগমনের মধ্যে কোন টাইমিং অনুমান করা যায় কি?  এবং ভয়াবহতা অনুমান করা যায় কি?

১৯। সুজনের কর্ণধার সহ, অন্যান্য বুদ্ধিজীবী নামক সরকারবিরোধী ব্যাক্তিবর্গ ও মিডিয়া সম্পাদকদের বর্তমান অবস্থান কোথায়?

২০। জামায়াত ও বিএনপির নেতাদের অবস্থান সম্পর্কে ধারনা আছে কি?

২১। কিছু আলেম সমাজ ইসলামের নামে করোনা হামলার মধ্যেও মাঠে মানুষ ধরে রাখার পায়তারার সাথে খুনির আগমনের কোন সম্পর্ক আছে কি?

অতি সাধারণ মাথায় এই প্রশ্নগুলো এসেছে, শেখ হাসিনার নিরাপত্তার স্বার্থে ও বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর নিকট প্রেরণ করলাম। এর বাইরে আমাদের আর কিছুই করার নেই।

আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি অবহেলায় ও বেঈমানী করে। শেখ হাসিনাকে কোন ভাবেই এমন ট্রাজেডির মুখোমুখি দেখতে চাইনা। বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনাকে বড্ড প্রয়োজন।  এই করোনা হামলার মধ্যেও দেখছি – ঐ একজন মানুষ সম্পূর্ণ আলাদা দাঁড়িয়ে মানুষের জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে। বাকি প্রতিটি স্থানেই গোলকধাঁধা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ